বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের উল্লেখযোগ্য ভোলাটিলিটি পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে, মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করার সময় এই পেয়ারের মূল্য স্থবির ছিল। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর, এই পেয়ারের মূল্য তীব্রভাবে বৃদ্ধি পায়, যদিও মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ফলাফল ডলারের জন্য সুস্পষ্টভাবে নেতিবাচক ছিল না। তবে, এক ঘণ্টার মধ্যেই ইউরো আবার তীব্র দরপতনের শিকার হয়য়। সাম্প্রতিক এই মুভমেন্ট এই ইঙ্গিত দেয় যে মার্কেটে আরেকটি কারেকশন হয়েছে, যা সম্ভবত গতকাল শেষ হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, গত সাড়ে তিনমাস ধরে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে, এবং গত ১৬ বছর ধরে সামগ্রিক নিম্নমুখী প্রবণতা বিদ্যমান। তাই, এই পেয়ারের আরও দরপতনের প্রত্যাশা করা যৌক্তিক। মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের ব্যাপারে, যদিও ব্যাখ্যাটি ভিন্ন মনে হতে পারে, আমরা মনে করি মূল বিষয় হলো মার্কিন ভোক্তা মূল্য সূচক টানা তিন মাস ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি পূর্বের অনুমান অনুযায়ী ২০২৫ সালে ফেডারেল রিজার্ভের দুইবার সুদের হার হ্রাসের বিষয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে, যা ডলারের দর বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে আরও শক্তিশালী করেছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, বুধবার দুটি স্পষ্ট ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে, এই পেয়ারের মূল্য 1.0334–1.0359 রেঞ্জ থেকে রিবাউন্ড করে এবং তারপর 1.0269–1.0277 রেঞ্জে নেমে আসে। উভয় ক্ষেত্রেই একটি রিবাউন্ড ঘটে, যা একটি ট্রেডিং সিগনাল প্রদান করে। নতুন ট্রেডাররা প্রথমে একটি শর্ট পজিশন ওপেন করতে এবং পরবর্তীতে একটি লং পজিশন ওপেন করতে পারত, দুটি পজিশনই লাভজনক ছিল। মূলত, লং পজিশনটি বৃহস্পতিবারেও হোল্ড করে রাখা যেতে পারে।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতার বিরাজ করছে। আমরা মনে করি মধ্যমেয়াদে ইউরোর দরপতন আবার শুরু হয়েছে, এবং ডলারের সাথে প্যারিটির লেভেলে পৌঁছানোর জন্য খুব বেশি দূরত্ব বাকি নেই। পূর্বের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ইউরো আরও দরপতন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণ দ্বারা সমর্থিত, যা মার্কিন ডলারকে সুবিধা দিচ্ছে।
বৃহস্পতিবার এই পেয়ারের মূল্যের তুলনামূলকভাবে শান্ত মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে, কারণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বেশ দুর্বল, যার মানে ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণে টেকনিক্যাল সিগনালগুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে, নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনা করা উচিত: 1.0156, 1.0221, 1.0269–1.0277, 1.0334–1.0359, 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, এবং 1.0845–1.0851। ইউরোজোনে, বৃহস্পতিবার জার্মানিতে ডিসেম্বরের মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদনের দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হবে, তবে কোনো চমকপ্রদ ফলফলের আশা করা হচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হবে খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন, তবে এটি মার্কেটে উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে বলে মনে হচ্ছে না।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।